উঠানে বাবার লাশ, পাশে ৫ সন্তান ব্যস্ত সম্পত্তির ভাগ নিয়ে

উঠানে বাবার লাশ, পাশে ৫ সন্তান ব্যস্ত সম্পত্তির ভাগ নিয়ে

উঠানে পড়ে আছে বাবার লাশ। এক-দুই ঘণ্টা নয়, টানা ২২ ঘণ্টা। তার পাশেই বসেছে দরবার। সেখানে উপস্থিত মৃতের পাঁচ সন্তান। তারা ব্যস্ত বাবার সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে। সম্পত্তি বণ্টনের আগে বাবাকে দাফন করা হবে না। এরপর ২২ ঘণ্টা পর সালিসের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে দাফনের সিদ্ধান্ত হয় ওই বৃদ্ধের লাশ।  এমন ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুরিয়ার অম্বলপুর গ্রামে। মৃত ব্যক্তি ওই গ্রামের ইয়াছিন মোল্লা (৮৫)।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় মৃত্যু হয় তার। আজ বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বাড়ির উঠানেই ফেলে রাখা হয় তার লাশ। পরে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃতের সন্তানদের এমন কাণ্ডে হতবাক স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানায়, মৃত ইয়াছিনের পাঁচ সন্তান বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া, মমতাজ ও আব্দুর রহমান। বাবার জমি নিয়ে ছোট ভাই আব্দুর রহমানের সঙ্গে বিরোধ ছিল বাকিদের। সেই বিরোধের জেরেই বাবার লাশ দাফন না করে জমির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

২২ ঘণ্টা পর দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে সালিসের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা হয়। স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়। ইয়াছিন মোল্লার বড় চার সন্তানের দাবি, ছোট ভাই আব্দুর রহমানের কাছে থাকতেন ইয়াছিন মোল্লা। এ সময় বাবাকে ফুঁসলিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে রাজবাড়ী কোর্টে একটি মামলা চলমান। রহমান ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাবাকে মেরে ফেলেছে বলে ধারণা তাদের।

আব্দুর রহমান মোল্লা বলেন, আমি ডাক্তারের কথা অনুযায়ী বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাই। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে বাবা আরও বেশি অসুস্থ হলে গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।

দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা শুনেই আমি তাদের বাড়িতে যাই এবং সালিসের মাধ্যমে লকডাউনের পরে সমাধানের কথা বলে স্ট্যাম্পে তাদের উভয় পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে ইয়াছিন মোল্লার দাফনের সিদ্ধান্ত নেই। গোয়ালন্দঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মাইনউদ্দিন সোহেল

আমি বর্তমানে একজন কন্টেন্ট রাইটার ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমি (২০১৪-১৫) সেশনে এইচএসসি ও (২০১৭-১৮) সেশনে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করি। পরবর্তীতে শখের বশে গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট শিখি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button