মজাদার শাহী চিকেন রোস্ট রেসিপি

মজাদার শাহী চিকেন রোস্ট রেসিপি

চিকেন রোস্ট আমার সবথেকে ফেভারিট একটি খাবার। আর মজাদার এই চিকেন রোস্ট রেসিপি সম্পর্কে না জানলে কি চলে! নিশ্চয়ই আপনারও চিকেন রোস্টের কথা শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। বিয়ে বাড়ি বা যেকোনো অনুষ্ঠানে চিকেন রোস্ট এর কোন বিকল্প নেই।  তবে আপনি ঘরে বসেই কিন্তু আপনার রান্না ঘরে থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় মসলার উপকরণ দিয়েই চিকেন রোস্ট তৈরি করতে পারেন। আজ আমি আপনাদের সেটি সম্পর্কে  বলব।

বড় বড় অনুষ্ঠানে চিকেন রোস্ট করার জন্য জয়ত্রী,  জায়ফল, পোস্তদানা, দই, ঘি, বাদাম বাটা এসব উপাদান ব্যবহার করা হয়, কিন্তু আমি এগুলোর কিছুই ব্যবহার করব না। আমি আগেই বলেছি রান্নাঘরের থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় মসলার উপকরণ দিয়ে আজ আপনাদের চিকেন রোস্ট কিভাবে তৈরি করবেন সেটি বলব। 

আপনি হয়তো ভাবছেন এগুলো ছাড়া আবার চিকেন রোস্ট হয় নাকি। ঠিক আছে আগে লেখাটা শেষ পর্যন্ত পড়ুন তবেই না বুঝতে পারবেন এটা আসলেই সম্ভব। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে চিকেন রোস্ট রেসিপিটা শিখে নিই এবং বাড়িতে এক্ষুনি তৈরি করতে বসে পড়ি।

চিকেন রোস্ট তৈরির উপকরণ সমূহঃ-

  1. তেল ১ কাপ
  2. পেঁয়াজ কুচি ৩ কাপ
  3. কাঁচা মরিচ ১০-১২ টা
  4. দেঁড়-দুই ইঞ্চি সাইজের দারচিনি ৩-৪ টা
  5. ছোট এলাচ ৭-৮ টা
  6. লং ৪-৫ টা
  7. গোলমরিচ  ১ চা চামচ
  8. গুড়ো দুধ হাপ কাপ
  9. ভিনেগার/পাতি লেবুর রস ১ টেবিল চামচ 
  10. লবন স্বাদ মতো
  11. তেজপাতা ৫/৭ টা
  12. আদা বাটা ২ টেবিল চামচ 
  13. রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ 
  14. মরিচের গুড়া ১ টেবিল চামচ
  15. ১৫/ পানি ৪ টেবিল চামচ 
  16. চিনি ১ চা চামচ ( আপনার স্বাদমতো ) 

চিকেন রোস্ট রেসিপি তৈরীর প্রস্তুত প্রণালীঃ-

প্রথমে একটি প্যানে পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল নিয়ে নিন। এরপর তেল একটু হালকা গরম হলে তিন কাপ পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিন। যেহেতু এই রান্নায় আর কোন পেঁয়াজ কুচি, পেঁয়াজ বাটা দেওয়া হবে না তাই পেঁয়াজকুচি একটু বেশি দেওয়া হয়েছে। এবার পেঁয়াজকুচি ভাল করে ভেজে নিন। পেঁয়াজ ভাজা হলে যখন হালকা বাদামি রংয়ের হয়ে আসবে তখন তেল থেকে তুলে ফেলুন। এবার এই ভাজা পেঁয়াজ থেকে কিছু পিয়াজ গার্নিশিং এর জন্য তুলে রাখুন। 

এবার জন্য একটি মসলার পেস্ট তৈরি করব। ব্লেন্ডারে বাকি পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিন সাথে দিন চার থেকে পাঁচটি কাঁচামরিচ, দেড় থেকে দুই ইঞ্চি সাইজের দারচিনি, ছোট এলাচ ৭-৮ টি, লং চার থেকে পাঁচটি, ১ চা-চামচ গোলমরিচ দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। তবে এটা আপনি চাইলে বাটনা বেটেও তৈরি করে নিতে পারেন। এবার মসলা তৈরি হয়ে গেলে একটি বাটিতে হাফ কাপ গুঁড়ো দুধ এবং হাফ কাপ পানি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। 

এবার এতে ১ টেবিল চামচ ভিনেগার দিয়ে দিন, তবে ভিনিগার না থাকলে এর পরিবর্তে আপনি ১ টেবিল চামচ পাতি লেবুর রস দিতে পারেন। এই মিশ্রণটি রান্নায় টকদই এর কাজ করবে। এবার চিকেন রোস্ট তৈরির জন্য একটি বাটিতে এক কেজি ওজনের একটি মুরগী চার থেকে পাঁচ পিস করে কেটে নিতে পারেন। এবার মুরগির সাথে সামান্য লবণ ও মরিচের গুড়া দিয়ে ভাল করে মেখে নিন। 

এবার চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে যে তেলে পেঁয়াজ ভাজা হয়েছিল সেই তেলের ভিতরে চিকেন গুলো দুই থেকে তিন মিনিট করে ভেজে নিতে হবে। তবে বেশি ভাজবেন না কারণ বেশি ভাজা হলে মুরগির বাইরে লেয়ার হার্ড ও ভেতরে ড্রাই হয়ে যাবে। মুরগি ভাজা হয়ে গেলে এবার তুলে নিন। 

এবার প্যানে থাকা তেলের ভেতর দিয়ে দিন দুই টুকরো দারুচিনি, ৩ টি তেজপাতা দিয়ে একটু ভাজার পর দিয়ে দিন ২ টেবিল চামচ আদা বাটা, ১ টেবিল চামচ রসুন বাটা, ১ টেবিল চামচ মরিচ গুঁড়া দিয়ে একটু কষিয়ে নিতে হবে। এবার কষানো মসলার ভেতর পেস্ট করা মসলা টুকু দিয়ে দিন। এবার এতে সেই দুধ যা আমরা টক দই এর বিকল্প হিসাবে তৈরি করেছি সেটুকু দিয়ে ৪-৫ মিনিট ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে। এবার কষানোর ফলে যখন তেলটা একটু ছেড়ে দিবে তখন এতে পরিমাণমতো লবণ দিয়ে একটু নেড়ে চেড়ে এর ভেতর চিকেন গুলো দিয়ে দিতে হবে। 

এই পর্যায়ে চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখতে হবে। এরপর ৩ থেকে ৪ টেবিল চামচ পানি দিয়ে চিকেন গুলো ৪ থেকে ৫ মিনিটের জন্য ঢেকে দিতে হবে। মাঝে দু’একবার ঢাকনা খুলে চিকেন গুলো একটু নেড়েচেড়ে দিতে হবে যাতে প্যানে চিকেন গুলো লেগে না যায়। এবার মাংস সেদ্ধ হয়ে আসলে এক চা-চামচ চিনি ও ৫ থেকে ৬ টি কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে হবে। তবে চিনি আপনি আপনার স্বাদমতো কম বা বেশি করে দিতে পারেন। 

এবার শুরুতে যে পেঁয়াজ ভাজা তুলে রেখেছিলাম সেগুলো চিকেনের ভেতর ছড়িয়ে দিয়ে প্যানে আবার ঢাকনা দিয়ে চুলার আঁচ লো করিয়ে দিয়ে আরও ৫ থেকে ৬ মিনিট ধরে রান্না করতে হবে। এবার রান্না প্রায় হয়ে আসলে মাংসগুলো সামান্য নেড়ে চেড়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ১০ মিনিট দমে রেখে দিতে হবে। এ পর্যায়ে চুলা বন্ধ করে দিন। ১০ মিনিট পর তৈরি হয়ে গেল আপনার প্রিয় পছন্দের চিকেন রোস্ট। এবার গরম গরম পরিবেশন করুন।

আশা করি এই রেসিপিটা আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর এটাও আশা করছি বাড়িতে অবশ্যই রান্না করেছেন। রান্না কেমন হল এটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না যেন।

মাইনউদ্দিন সোহেল

আমি বর্তমানে একজন কন্টেন্ট রাইটার ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমি (২০১৪-১৫) সেশনে এইচএসসি ও (২০১৭-১৮) সেশনে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করি। পরবর্তীতে শখের বশে গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট শিখি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button