জীবন মানে কি? নিজে ভাল থাকার নামই কি জীবন?? - Sironam Tv

জীবন মানে কি? নিজে ভাল থাকার নামই কি জীবন??

জীবন মানে কি? জীবনের মানে হয়তো অনেকে অনেকভাবে করে থাকেন। জীবন মানে যুদ্ধ, যদি তুমি লড়তে পারো। জীবন মানে সংগ্রাম, যদি তুমি করতে পারো। জীবন মানে খেলা, যদি তুমি খেলতে পারো। জীবন মানে স্বপ্ন, যদি তুমি গড়তে পারো। জীবন মানে কষ্ট, যদি তুমি সইতে না পারো।

জীবনের কোন না কোন একটা সময়এই প্রশ্নটার সম্মূখীন হয়েছেন কিংবা হবেন। জীবন মানে কি- এই প্রশ্নের জবাবে উত্তর অনেকে নিজের মনের মতো করে উত্তর দিবে।

জীবন মানে কি – গল্প

জীবন মানে কি শুধুই হাহাকার, জীবন মানে কি শুধুই কষ্ট, জীবন মানে কি শুধুই বেঁচে থাকা। জীবন মানে কি এই নিয়ে আজ আমি আপনাদের একটা গল্প শুনাব। ধৈর্য সহকারে গল্পটি পড়বেন। একটা ছেলে ছিল, সে খুব ধনী ছিল না । যা ইনকাম করত তা দিয়ে কোনমতে মাস পেরিয়ে যেত । ছেলেটি ছোটো আক্দএকটা চাকারি করতো। সকালে অফিস যাওয়ার পথে একটা পানির পাইপ ফেটে তার মাথায় পানি পড়তে লাগলো । 

ঠিক তার পাশেই রাখা ছিল কয়েকটি ফুলের টপ । ঐ টপে রাখা ফুল গাছগুলোর পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছিল, এক কথা শুকিয়ে গিয়েছিল । ছেলেটি  কি করলো ! ওই ফুলের টবগুলো যেখানে পানি পড়ছিল ঠিক সেখানে রেখে দিল । তারপর সামনের দিকে চলতে লাগলো । 

এবার রাস্তায় দেখতে পেল একটি মধ্য বয়স্ক মহিলা ঠেলা গাড়িতে করে মাল বিক্রি করে যাওয়ার সময় একটি খাদে তার ঠেলা গাড়িটি আটকে গেল । আসে পাশে অনেক লোক ছিল কিন্তু কেউ ওই মহিলাকে সাহায্য করল না । ঐ ছেলেটি দৌড়ে গিয়ে ওই মধ্য বয়স্ক মহিলার সাথে ঠেলাগাড়ি টি খাদ থেকে উঠিয়ে দিল । 

এতে ঐ মধ্য বয়স্ক মহিলাটি অনেক খুশি হলো । তারপর আরো কিছু পথ চলতে চলতে একটা রাস্তার পাশে একজন মা ও তার মেয়ে ভিকারি কে দেখতে পেল । ছেলেটির দেখে খুব কষ্ট লাগলো যে বয়সে মেয়েটির স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে তার মায়ের সঙ্গে বসে ভিক্ষা করছে । তার মনটি কেঁদে উঠলো । সে তার মানিব্যাগটা বের করে কিছু টাকা ওই ছোট্ট মেয়েটির হাতে দিলো । মেয়ে ও তার মা ছেলেটির মুখের দিকে তাকিয়ে রইল । 

এবার ছেলেটি তার অফিসে চলে গেল । অফিসে লাঞ্চ টাইমে ছেলেটি যখন রেস্টুরেন্টে বসে চিকেন খাচ্ছিল, ঠিক তখনই একটি কুকুর তার পাশে গিয়ে বসে তার খাওয়া দেখতে লাগলো । কুকুরটি ছিলো ক্ষুধার্ত । সে কোন কিছু না ভেবেই তার খাবারের কিছু অংশ অর্থাৎ চিকেন ওই কুকুরটিকে দিয়ে দিল ।  

অবশ্যই পড়ুনঃ-

তারপর আবার অফিসে চলে গেলো  কাজে ।  অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে সে যে বাসায় থাকতো ঠিক তারই পাশে এর একটি বাসায় একটি বৃদ্ধ মহিলা ছিল , যার কেউ ছিলনা । মহিলাটি এতটাই বৃদ্ধ ছিল যে , সে কোন কাজ করে অর্থ উপার্জন করার মত ছিল না . 

তাই কোনোভাবেই ওই বৃদ্ধ মহিলাটি দিন কাটত ।তাই ছেলেটি প্রতিদিন রাতে অফিস থেকে ফিরে  ওই বৃদ্ধ মহিলাটির দরজা কিছু কলা রেখে দিত এবং কলিং বেলটা চেপে দিয়েই  সেখান থেকে চলে যেতে ।  ওই ছেলেটির জীবন এভাবেই চলতে লাগলো । 

প্রতিদিনই সে ওই গাছটি কে দেখে যে গাছটি পানির নিচে রেখে দিয়েছিল । একইভাবে ওই মধ্য বয়স্ক মহিলার ঠেলাগাড়িটি খাদ থেকে উঠিয়ে দিতো । ওই ভিখারি মেয়েটিকে টাকা দিতো ।  কুকুরটিকে প্রতিদিনই রেস্টুরেন্টে খাওয়াতো এবং ওই বৃদ্ধ মহিলার দরজায় প্রতিদিনই কলা রেখে দিত । এভাবে কয়েক মাস চলার পর সে দেখতে পেলো পানির অভাবে মারা যাচ্ছিল যে গাছটি, সেই গাছটির সতেজ হয়ে ফুল ধরেছ্‌ প্রজাপতি এসে বসছে ওই ফুলে ।

ওই মধ্যবয়স্ক মহিলাটি একটি স্থায়ী দোকান দিয়েছে যে দোকানে ছেলেটি প্রতিদিন অফিস যাওয়ার পথে গিয়ে বসে এবং ওই মধ্য বয়স্ক মহিলাটি তাকে নিজের ছেলের মতোই আদর করে । তারপর হঠাৎ একদিন ওই বাচ্চা মেয়েটিকে ভিক্ষা দিতে গেলে দেখে মেয়েটি ওখানে আর নেই , শুধু তার মা বসে আছে । 

জীবন মানে কি

একটু পরেই দেখি ওই বাচ্চা মেয়েটির কাঁধে স্কুলের ব্যাগ অর্থাৎ তার দেওয়া টাকায় সে আজ স্কুলে ভর্তি হয়েছে এবং স্কুলে যাচ্ছে । এটা দেখে ছেলেটি কেঁদে ফেলে । রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর পর একদিন ওই কুকুরটি তার পিছন পিছন তার বাসায় চলে আসে এবং ছেলেটিকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে । সব সময় ছেলেটির সাথে থাকে । 

এটাকেই হয়ত বলে ভালোবাসা । ওই রাস্তা দিয়ে আরও অনেক ধনী ব্যক্তি যাতায়াত করত কই তারা তো কখনো এদের দিকে ফিরেও তাকায় নি । কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের এই ছেলেটি তারা ভালোবাসায় কত কিছু বদলে দিল ।

তারপর একদিন রাতে যখনই ছেলেটি ওই বৃদ্ধ মহিলার দরজায় কলা রাখতে গিয়েছে , সেদিনই বৃদ্ধ মহিলাটি ছেলেটিকে ধরে ফেলেছে । কারণ ওই মহিলাটি অপেক্ষা করছিলো যে প্রতিদিন কে কে তার দরজায় কলা রেখে দিয়ে চলে যায় । বৃদ্ধ মহিলাটি যখনই  দেখতে পেলো ছেলেটিকে তখনই তাকে ডেকে বুকে জড়িয়ে ধরল । 

এত বড় পোষ্টটি লেখার একটাই সারমর্ম জীবন অনেক ছোট । তাই আমরা শুধুমাত্র টাকা পয়সার দিকে না তাকিয়ে আমরা আমাদের মা-বাবা , আশেপাশের প্রতিবেশী , গরিব-দুঃখীদের দিকে একটু খেয়াল করি। একটু ভালোবাসা দৃষ্টিতে দেখি তাদেরকে । তাহলে হয়তো আমাদের একটু ভালোবাসায় তাদের জীবনটা পরিবর্তন হয়ে যাবে ।

মাইনউদ্দিন সোহেল

আমি বর্তমানে একজন কন্টেন্ট রাইটার ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমি (২০১৪-১৫) সেশনে এইচএসসি ও (২০১৭-১৮) সেশনে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করি। পরবর্তীতে শখের বশে গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট শিখি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button